এই শিবমন্দিরে বজ্রপাতে শিবলিঙ্গ খন্ডিত হয়ে যায়

আমরা মহাদেবের অনেক মন্দির সম্পর্কেই জানি। মহাদেবের এমন অনেক মন্দির আছে যেগুলো রহস্যে ।আজ আপনাদের জানাবো এমন এক শিবমন্দির সম্পর্কে যেই মন্দিরে প্রতি বারো বছরে একবার বজ্রপাত হয় এবং সেই বজ্রপাতে এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ খন্ডিত হয়ে যায়। 

বহু রহস্যে হিমাচলে ঘেরা মন্দির রয়েছে দেবদেবীর।তেমনই এক মন্দির হলো  মহাদেব বিজলি মন্দির। মহাদেবের এই মন্দিরে প্রতি ১২ বছরে একবার করে ভয়ঙ্কর বজ্রপাত হয়। কুলু থেকে মাত্র ২২ কিলোমিটার দূরত্বে কুলুর ব্যাস ও পার্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে প্রকৃতির মাঝে অবস্থিত এই প্রাচীন শিব মন্দির। এই  বিজলি মহাদেব মন্দিরে সর্বদাই বিরাজমান স্বয়ং মহাদেব।প্রকৃতির রোষ থেকে সর্বদা তিনি গ্রামবাসীকে রক্ষা

পুরাণে বর্ণিত আছে, এই অঞ্চলে এক সময় কুলান্ত নামে এক দৈত্য থাকত। সেই দৈত্য সাপের রূপ ধারণ করতে পারত। একবার কুলান্ত বিরাটাকার অজগর সাপের রূপ ধরে মথান গ্রামের কাছে ব্যাস নদীতে কুণ্ডলি পাকিয়ে নদীর জলস্রোত বাধা দিচ্ছিল। 

কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা যায় এই অঞ্চলের নদীর জল বেড়ে যায় এবং সমস্ত গ্রাম প্লাবিত হওয়া শুরু করে। আসলে এই দৈত্য কুলান্ত গ্রামের সব মানুষকে জলে ডুবিয়ে মারতে চেয়েছিল।

কিন্তু মহাদেব তার এমন কাজ দেখে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। তখন তিনি স্বয়ং আসেন এই দৈত্যকে বাধা দিতে। 

মহাদেব কুলান্তকে বলেন, তার লেজে আগুন ধরেছে। কুলান্ত যখন পিছনে ফিরে দেখতে গেলো তখন মহাদেব তাঁর ত্রিশূল দিয়ে তাকে বধ করেন।

 মৃত্যুর পরে তার সাপের দেহ পরিবর্তিত হয়ে একটি বিশাল পাহাড়ে পরিণত হয়েছিল।  সম্ভবত এই কারণেই কুলান্তের মৃত্যুর পরে উপত্যকাটি কুলু নামে পরিচিত হয়েছে। 

এক সময়ে এখানেই তৈরি হয় মহাদেবের এই মন্দির। বজ্রপাতে এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ খন্ডিত হয়ে যায়। 

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এই মন্দিরের পুরোহিত সেই খন্ডিত হওয়া  টুকরো  জুড়ে দেন  মাখন  দিয়ে। এবং কয়েক মাস পরেই দেখা যায় সেই শিবলিঙ্গ আবারও আগের মতোই হয়ে যায়।

স্থানীয়রা বিশ্বাস করে, গ্রাম ও গ্রামবাসীদের বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা করতে মহাদেব স্বয়ং নিজের উপরেই প্রকৃতির এই কোপ বহন করেন। 

বিজলি মহাদেবের মন্দিরে পৌছানোর জন্য ১০০০ সিঁড়ি অতিক্রম করতে হয়। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *