সদগুরু ও তার আধাত্মিকতা

সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেব হলেন একজন ভারতীয় যোগী এবং লেখক। তিনি ১৯৫৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ভারতে কর্ণাটকের মহীশূরে জন্মগ্রহণ করেন। আজ আপনাদের জানাবো সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেব ও তার আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে।  

সদগুরুর জন্ম ভারতের কর্ণাটকের মহীশূর এ তেলেগু ভাষাভাষী পরিবারে। পরিবারের চার সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন তিনি। তার বাবা ছিলেন ভারতীয় রেলওয়ের একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। এজন্য তার পরিবারকে ঘন ঘন জায়গা বদলাতে হত। মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি মল্লাদিহাল্লি শ্রী রাঘভেন্দ্র স্বামীজির সাথে যোগাযোগ করেন। স্বামীজি তাকে সাধারণ যোগব্যায়াম আসনের একটি আনুষঙ্গিক অংশ শিখিয়েছিলেন, যা তিনি নিয়মিতভাবে পালন করতেন। একদিনের বিরতি ব্যতিরেকে এই সহজ যোগব্যায়াম করে তিনি  গভীর অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন।

সদগুরু তিনি ডেমনোসট্রেশন স্কুল অ্যান্ড মহাজন প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ,মহীশূর এ পড়েন ১৯৭৩ সালে।তিনি স্নাতক ডিগ্রী স্নাতক অর্জন করেন স্কুলের পর মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে।  

সদগুরু  জাতিসংঘের সদর দপ্তর, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, অস্ট্রেলিয়ান লিডারশিপ রিট্রিট, ভারতীয় অর্থনৈতিক সামিট এবং টেড এ একজন প্রধান স্পিকার হয়েছেন।

তিনি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি,লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স,ইউনিভার্সিটি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি,হোয়ার্টন,এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও বক্তৃতা দিয়েছেন।এছাড়াও তিনি গুগলে  স্পিকার ও ছিলেন।

সংস্থা ইশা ফাউন্ডেশন একটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন।এই প্রোগ্রাম করে সংস্থাটি সারা বিশ্বে দেয় যোগ।এছাড়াও এটি শিক্ষা,সামাজিক প্রচার এবং উদ্যোগের সাথেও জড়িত পরিবেশগত।

তার লেখা বিভিন্ন বই আছে। এগুলো হিন্দি, তামিল, তেলেগু সহ অন্যান্য অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

তার বই “স্বাস্থ্য” ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা,  বিশ্বাস  বিবিধ ইত্যাদি একাধিক বিভাগে নিউইয়র্ক টাইমস শ্রেষ্ঠ বিক্রেতা তালিকাতে ছিল। 

অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আধ্যাত্মিকতার ক্ষেত্রে তার তাকে পদ্মবিভূষণ বেসামরিক পুরস্কার প্রদান করে ২০১৭ সালে ভারত সরকার। 

সদগুরুর আধ্যাত্মিক জীবন শুরু হয় ১৯৮২ সালে।

তিনি চামুণ্ড‌ী পাহাড়ে উঠেন এবং একটি শিলাতে বসেছিলেন ১৯৮২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর।এখানেই তিনি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন।  

এই অভিজ্ঞতা লাভ করার ছয় সপ্তাহ পরে তিনি তার বন্ধুর কাছে তার ব্যবসা ছেড়ে চলে যান এবং তার রহস্যময় অভিজ্ঞতার অন্তর্দৃষ্টি অর্জনের প্রচেষ্টায় ভ্রমণ করেন। এরপর প্রায় এক বছর ধ্যান ও ভ্রমণের পর তিনি যোগব্যায়ামে তার অভ্যন্তরীণ অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। 

তিনি ১৯৮৩ সালে  মহীশূরে সাতজন অংশগ্রহণকারী নিয়ে প্রথম যোগব্যায়াম ক্লাস পরিচালনা করেন। তবে সময়ের সাথে সাথে তিনি কর্ণাটক ও হায়দ্রাবাদ জুড়ে মোটরসাইকেলে চড়ে যোগব্যায়াম ক্লাস পরিচালনা শুরু করেন। তিনি স্বাভাবিক অনুশীলন ক্লাসের শেষ দিন অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সাহায্য স্থানীয় এক দাতব্য সংস্থায় দান করতেন। 

এছাড়াও তার প্রতিষ্ঠিত ইশা ফাউন্ডেশন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সাথে একত্রে কাজ করে।সদগুরু নিয়মিত তামিলনাড়ু ও কর্ণাটক এ মহাসৎসঙ্গ পরিচালনা করেন। এখানে তিনি ধ্যান শিক্ষা দেন,বক্তৃতা দেন এবং প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন দর্শকদের। তিনি বার্ষিক যাত্রাগুলিতে আধ্যাত্মিক পদপ্রার্থীদেরও গ্রহণ করেন কৈলাশ এবং হিমালয় পর্বতমালার।

তারই নেতৃত্বে কৈলাশ যাত্রা ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ৫১৪ জন তীর্থযাত্রীসহ, যা ছিল কৈলাশ ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে বড় দলগুলোর মধ্যে একটি।  

এছাড়াও তিনি  বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অর্থনৈতিক ফোরামে অংশগ্রহণ করেছিলেন।তিনি ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *