দেবী নমগিরি(লক্ষী)প্রদত্ত গাণিতিক ফর্মূলা পেয়ে বিশ্ব বিখ্যাত হন যে গণিতবিদ-শ্রীনিবাস রামানুজন

ইশ্বরের মহিমা যে কত অনন্ত,অসীম সেটাই স্পষ্ঠ হয়ে ওঠেছিল যখন দক্ষিন ভারতের এক সামান্য ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান শ্রীনিবাস রামানুজন স্বপ্নে পেয়েছিলেন দেবী লক্ষীর কাছ থেকে দুর্দান্ত কিছু গণিতের ফর্মূলা। আজকে আপনাদেরকে বলবো বিশ্বব্যাপী গনিত ও বিজ্ঞানে আলোড়ন সৃষ্টিকারী সেই ঘটনা নিয়ে।

মোরী বিশ্ববিদ্যালয়,এাটল্যান্টা,জর্জিয়া এর একজন গনিতবিদ ক্যান ওনো তার দুইজন প্রাক্তন ছাত্রের সাথে ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে আবিস্জার করেন চানক্য গানিতিক ফর্মুলা যার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক হোল গবেষণা ও বুঝতে পারবেন।তারা এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিল শুধুমাত্র শ্রীনিবাস রামানুজনের লেখা একটা অনুচ্ছেদ এর উপর ভিত্তি করে। ৯০ বছর আগে আবিসকার করা শ্রীনিবাস রামানুজনের এক গানিতিক তত্ব ব্লাক হোল ব্যাখায় বিজ্ঞানের জগতে হৈচৈ ফেলে দেয়।  রামানুজনের গানিতিক তত্বের উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়েছে সুপার স্ট্রিং থিওরি,মাল্টিডাইমেনসনাল ফিসিক্স,মডুলার ফাংশন যা বিজ্ঞানীরা যেসব সবচেয়ে জটিল গনিত ব্যবহার করেন এগুলে তাদের মধ্যে অন্যতম।এগুলোই ভবিষ্যতের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, টাইম ট্রাভ্যাল,অ্যন্টি গ্রাভিটি,মুক্ত অসীম শক্তির বিষয়গুলো স্পষ্ঠ করে।রামানুজন ইন্ট্রিগ্যাল ক্যালকুলাসের এমন কিছু তত্ব আবিস্কার করেন যার মাধ্যমে উড়োজাহাজ বাতাসে ওড়ে যাওয়ার সময় পাখায় তৈরী টান বল ও পৃথিবী কর্তৃক কৃত্রিম উপগ্রহের উপর অভিকর্ষজ প্রভাব পরিমাপ করা যায়। কিন্তু রামানুজন এই গানিতিক তত্ব নিজে আবিস্কার করেন নি।

রামানুজন ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রদেশের তাঞ্জোর জেলার ইরেভদ শহরের এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কে শ্রীনিবাস ইয়েঙ্গার ছিলেন শহরের একটি কাপড়ের দোকানের হিসাবরক্ষক। তার মা কোমালাটাম্মাল একজন গৃহিণী ছিলেন এবং একটি স্থানীয় মন্দিরে গান গাইতেন। তিনি ছিলেন তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন মহিলা। প্রচলিত আছে যে, রামানুজনের মায়ের বিয়ের পর বেশ কয়েকবছর কোন সন্তান না হওয়ায়, রামানুজনের মাতামহ নামাক্কল শহরের বিখ্যাত নামগিরি অর্থাৎ লক্ষী দেবীর নিকট নিজ কন্যার সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেন। এরপরই জ্যেষ্ঠ সন্তান রামানুজন জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু। ধর্মীয় অনুশাসন পালনে তিনি যথেষ্ট কঠোরতা অবলম্বন করতেন।তিনি নিরামিষভোজী ছিলেন।

রামানুজন ছোট্টবেলা থেকেই সংখ্যা নিয়ে ভাবতেন এবং বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা নিয়ে আছন্ন থাকতেন এবং সেগুলো নিয়ে হিসাব করতেন।গনিত তাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল।তিনি যেখানে থাকতে তার পাশেই ছিল স্বরনগোপানী মন্দির।তিনি বাল্যকালে অনেক সময় ধরে এই মন্দিরে বিভিন্ন হিন্দু দেব দেবীর খোদাই করা প্রতিমার মধ্য থাকতেন।তিনি প্রায়ই মন্দিরে আসতেন এবং অংক করতেন। তিনি স্বপ্নে দেখতেন দেবী নমগিরিকে আমাদের কাছে যিনি লক্ষী নামে পরিচিত।দেবী তাকে বিভিন্ন জটিল সমীকরন লিখে দিতেন লাল পর্দায় তার হাত দিয়ে। সেই স্বপ্নে পাওয়া দেবীর সমীকরনগুলোই মনে রেখে তিনি চক দিয়ে মন্দিরের পাথরের স্ত্ম্ভের উপর বিভিন্ন গানিতিক সমীকরন আকারে লিখতেন।তার চারপাশ দিয়ে যা লেখা থাকত তা হল জটিল সব গানিতিক ফর্মূলা যা তিনি দেবীর কাছ থেকে স্বপ্নে দেখতেন।তার চিন্তা,দৃষ্টিতে দেবী লক্ষীর আর্শীবাদস্বরুপ ভেসে বেড়াত বিজ্ঞান জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিস্ময়কর সব গানিতিক সুত্র। তাই রামানুজান বলেছেন -সমীকরণ ইশ্বরের চিন্তাকে প্রকাশ করতে যদি না পারে তার কোন অর্থই নেই আমার কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *