যে চরিত্রগুলির উল্লেখ মহাভারত ও রামায়ণ উভয়ে আছে

রামায়ণ ও মহাভারত দুইটি মহাকাব্য। এই মহাকাব্য দুইটিতে  অনেক চরিত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এমন অনেক চরিত্র আছে যাদের উল্লেখ রামায়ন ও মহাভারত উভয়ে পাওয়া যায়। আজ আপনাদের এমনি কয়েকটা চরিত্র সম্পর্কে জানাবো যাদের উল্লেখ রামায়ন ও মহাভারত উভয়ে আছে।           

১. পরশুরাম 

রামায়ণ থেকে জানা যায় সীতার স্বয়ম্বর সভায় যখন রাম মহাদেব শিবের ধনুক ভেঙেছিলেন তখন  এই খবর  পরশুরাম জানতে পেরেরামকে প্রতিযোগিতার জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু পরে যখন পরশুরাম জানতে পারেন রাম আসলে ভগবান বিষ্ণুর অবতার তখন তিনি ক্ষমাপ্রার্থণা করেন।  আবার মহাভারতে দেখা যায়  পিতামহ ভীষ্ম ও অঙ্গরাজ কর্ণের গুরু হিসাবে পরশুরামের উল্লেখ রয়েছে। একবার পরশুরামের সাথে ভীষ্মের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়।

২. হনুমান 

 রামায়ণে হনুমান একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র।  ভগবান রামের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন হনুমান।   সীতা উদ্ধারে রামের অন্যতম সঙ্গী ও ছিল হনুমান। মহাভারতেও হনুমানের উল্লেখ পাওয়া যায়। ভীম যখন সুগন্ধিকা পুষ্প আনতে যায় তখন এক বৃদ্ধ বানর দেখেন। ওই বৃদ্ধ বানরের লেজে রাস্তা আটকে ছিল। তখন ভীম ওই বৃদ্ধ বানরকে তার লেজ সরানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু  বানর বলেন, তিনি বৃদ্ধ  নিজের লেজ নাড়ানোর ক্ষমতাও তার নেই। তাই তিনি বলেন ভীমকেই  লেজ সরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু লেজ সরাতে ব্যর্থ হয় ভীম। তখন  ভীম বৃদ্ধ বানরের আসল পরিচয় জানতে চান। তারপর নিজের পরিচয় দেন হনুমান।

৩. জাম্বুবান

রামায়ণ উল্লেখ আছে জাম্বুবান ছিল রামের সেনার অন্যতম এক সদস্য। যখন সীতার খোজ নিতে  হনুমানকে পাঠানোর কথা হয় তখন পূর্বের এক অভিশাপের কারণে নিজের শক্তি সম্পর্কে ভুলে গিয়েছিলেন হনুমান। সেই সময় জাম্বুবানই হনুমানকে তার  শক্তি সম্পর্কে অবহিত করেছিল। আবার মহাভারতে দেখা যায় কৃষ্ণর আসল পরিচয় না জেনেই কৃষ্ণের সঙ্গে যুদ্ধ করেন জাম্বুবান। যখন জাম্বুবান জানতে পারে  রাম ও কৃষ্ণ একই তারা দুজনেই নারায়ণের অবতার,  তখন কৃষ্ণের কাছে ক্ষমা চান জাম্বুবান। 

৪.বিভীষণ 

 বিভীষণ রাবণের ভাই তা কারোরই অজানা নয়। রাবণের বিরুদ্ধে তিনি রামের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। এরপর যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর লঙ্কার রাজা হয়েছিলেন বিভীষণ। আবার মহাভারতেও দেখা যায় পাণ্ডবরা যখন রাজসূয়  যজ্ঞের আয়োজন করেন তখন বিভীষণ তাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং বহু উপহার প্রদান করেন।

৫.মায়াসূর 

রামায়ণে পাওয়া যায় মায়াসুর ছিলেন বারণের শ্বশুর। রাবণের স্ত্রী মন্দোদরী ছিলেন মায়াসুরের কন্যা। আবার মহাভারতে যখন পাণ্ডবরা দণ্ডকারণ্য জ্বালিয়ে দিয়েছিল তখন এই মায়াসূরই একমাত্র বেচে গিয়েছিল। অবশ্য পরে এই মায়াসূরই ইন্দ্রপ্রস্থ তৈরি করেছিল।

৬.মহর্ষি দুর্বাসা 

রামায়ণে পাওয়া যায় মহর্ষি দুর্বাসাই ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি রাম ও সীতার বিচ্ছেদের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। আবার মহাভারতে ও উল্লেখ আছে মহর্ষি দুর্বাসার। তার মন্ত্রেই পঞ্চপাণ্ডের জন্ম হয়েছিল। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *