ফল্গু নদী, ব্রাহ্মণ, তুলসী বৃক্ষ, ও গাভীকে মাতা সীতার অভিশাপ রাজা দশরথের মৃত্যুর খবর জানার পর। রাম লক্ষণ ও সীতা তার পিন্ড দান করতে চান। কিন্তু তারা তখন বনবাসে কি দিয়া করবে সেই পিন্ড। পিন্ডদানের কিছু দ্রব্য আনতে দুই ভাই বাইরে গেলেন আর মাতা সীতাকে ফল্গু নদীর তীরে রেখে গেলেন।সীতা মাতা নদীর বালি নিয়ে খেলছিলেন।এমন সময় রাজা দশরথ মাতা সীতার কাছে পিন্ড চান। সীতা শ্রী রামের অগোচরে পিন্ড দিতে চান না।
কিন্তু দশরথ বলেন আমি ক্ষুদায় খুব কষ্ট পাচ্ছি। তুমি আমাকে বালুকা দ্বারা পিন্ড দান করো, কিন্তু সীতা বলেন শ্রী র্যাম আসে যদি বিশ্বাস না করে। তখন দশরথ বলেন তুমি তাহলে সাক্ষী রেখে দাও. তখন সেখানে একজন ব্রাম্মন ফল্গু নদী, তুলসী বৃক্ষ,গাভী , বট বৃক্ষ ছিল. সীতা এদেরকে সাক্ষী রাখেন. রামচন্দ্র ফিরে আসলে, সীতা বলেন আর পিন্ড দেওয়ার প্রয়োজন নাই পিতাশ্রী আমার কাছে পিন্ড চেয়েছিলো আমি দিয়া দিয়েছি। রাম তখন বলেন তুমি যে পিন্ড দিয়েছো তার প্রমান কি। তখন মাতা সীতা বলেন ফল্গু নদী, ব্রাহ্মণ, তুলসী বৃক্ষ,গাভী বট বৃক্ষ সাক্ষী আছেন। আপনি তাহাদিগের নিকট প্রশ্ন করুন!” রাম লক্ষ্মণ ঘটনা অবিশ্বাস করলে তিনি ৫ সাক্ষীকে ডেকে পাঠান। আশ্চর্যজনক ভাবে নদী, তুলসী, গাভী, ও ব্রাহ্মণ প্রত্যেকেই এই ঘটনা অস্বীকার করে। শুধুমাত্র অক্ষয় বট সত্যি কথা বলে। এই ঘটনার পর ওই চার সাক্ষীকে অভিশাপ দেন সীতা। তিনি বলেন ফল্গু নদী গয়ায় কেবলমাত্র মাটির নীচ দিয়ে বইবে। সীতাদেবীর অভিশাপে ফল্গু নদীর উপরে বালির চড়া পড়লো। একটু খুঁড়লে সেখানে জল পাওয়া যায়। আজও পবিত্র গয়া ধামে ফল্গু নদী এইভাবে আছে ।গরুকে অভিশাপ দিলেন তিনি। গো কূলের মুখ অপবিত্র বিবেচিত হবে। পবিত্র বিবেচিত হবে শুধুমাত্র তাদের পেছনের অংশ। এরপর অভিশপ্ত হল তুলসী। সীতা বললেন এরপর থেকে গয়ায় কোনো তুলসী গাছ থাকবে না। এবং মাতা সীতার অভিশাপে কুকুর তুলসী মঞ্চে উঠে মূত্র ত্যাগ করে। ব্রাহ্মণ অভিশপ্ত হল তারা কখনোই পরিতৃপ্ত হবেন না। যতই ঘরে দ্রব্য থাকুক, ব্রাহ্মণ তবুও ভিক্ষা চেয়ে বেড়াবে। এই অভিশাপ কলিযুগে আরোও প্রভাব শালী হবে।
ফল্গু নদী, ব্রাহ্মণ, তুলসী বৃক্ষ, ও গাভীকে মাতা সীতার অভিশাপ যখন বট বৃক্ষ কে জিজ্ঞাসা করে তিনি তখন বলেন প্রভু রামচন্দ্র অন্তর্যামী। তিনি সব জানেন। তবুও আমি বলছি- আমি দেখেছি আপনার শ্বশুর তথা শ্রীরামচন্দ্রের পিতা স্বর্গীয় রাজা দশরথের আত্মা এখানে এসে আপনাকে পিণ্ড দিতে বলেছিলেন। আপনি বালুকা দ্বারা পিণ্ড দিয়েছেন। আমি এই ঘটনার সাক্ষী।” বট বৃক্ষ এরপর রামচন্দ্রকে প্রনাম জানিয়ে বললেন- “প্রভু! আমি এর সাক্ষী। মাতা সীতা ঠিক বলেছেন। তখন মাতা সীতা বলেন যে তোমায় আশীর্বাদ করি, তুমি চিরজীবি ও অক্ষয় হও । বট বৃক্ষ তলে দেবতারা থাকেন। সাধনার উপযুক্ত যে বৃক্ষ গুলি আছে তাদের একটি বট বৃক্ষ । সেই থেকে গয়ার বটগাছে সবাই পিণ্ডদান করেন।