দ্রৌপদী এবং পঞ্চপান্ডব কিভাবে মারা গিয়েছিলেন?

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে, কৌরবরা হেরে যায় এবং পাণ্ডবরা  জয়ী হয়।পান্ডবরা হস্তিনাপুরে ৩৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে  শাসন করে।

কৃষ্ণের মৃত্যুর পরে, পান্ডবরা হতাশ হয়ে পরে তখন অর্জুন বেদব্যাসের মুখোমুখি হন। তিনি পান্ডবদের সিংহাসন ত্যাগ করতে এবং বানপ্রস্থর  উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পরামর্শ দেন।বানপ্রস্থ হলো সংসার  জীবন থেকে বেরিয়ে এসে  মোক্ষ বা  (আধ্যাত্মিক মুক্তি) -এর উপর অধিক জোর দেয়া . পান্ডবরা পরীক্ষিৎকে  হস্তিনীপুরের সিংহাসনে বসিয়ে তীর্থযাত্রার উদ্দেশ্যে রওনা হন. পাণ্ডবরা বিশ্বাস করতেন যে তারা দারুন  শাসক। তারা ধর্ম অনুসরণ করে চলেন এবং তাদের সমস্ত দায়িত্ব যথাযথ  পালন করে। সুতরাং তারা অবশ্যই সশরীরে (স্বর্গে)  স্থান পাবে।দ্রৌপদী সহ পাণ্ডবগণ স্বর্গ পৌঁছানোর অভিপ্রায় নিয়ে বিভিন্ন তীর্থস্থান ভ্রমণ করেন এবং  হিমালয় পর্বত পরিদর্শন করেন।যে পর্বতের চূড়া  স্বর্গের প্রবেশদ্বার বলে মনে করা হয় তারা স্বর্গে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে সেই পর্বতে  আরোহণ শুরু করেছিলেন । তাদের সাথে  একটি কুকুর ছিল.

দ্রৌপদী এবং পঞ্চপান্ডব পর্বত আহরণ করতে করতে প্রথমে  দ্রৌপদী পড়ে যান।অর্জুন  যুধিষ্ঠিরকে  জিজ্ঞাসা করেসিলেন   দ্রৌপদী কেন পরে যাচ্ছে,যুধিষ্ঠির উত্তর দিয়েছিলেন , দ্রৌপদী অন্য স্বামীদের  তুলনায় অর্জুনকে বেশি ভালোবাসতো।এরপর  দ্রৌপদী পরে যান এবং মৃত বরন করেন. 

পরবর্তীতে  সহদেব পড়ে যায় ,এবার  ভীম কারণ জিজ্ঞাসা করেন । যুধিষ্ঠির বলেন যে, সহদেব তার জ্ঞান নিয়ে খুব গর্বিত ছিলেন। ফলে সেও  স্বর্গে  যাওয়ার আগেই মারা যান

Draupadi and Panchpandava

দ্রৌপদী এবং পঞ্চপান্ডব কিভাবে মারা গিয়েছিলেন পরবর্তীতে  নকুল ও পড়ে যান , কারণ জানতে চাইলে ভীম কে  যুধিষ্ঠির বলেন যে ,নকুল তার সৌন্দর্যে খুব গর্বিত ছিলেন। তিনিও পরে গিয়ে মৃতবরণ করেন

এরপরে অর্জুন ও পরে যান,ভীমের প্রশ্নে যুধিষ্ঠির বলেন যে। অর্জুন   তাঁর ধনুকের দক্ষতায ও পৃথিবীর সেরা যুদ্ধা হিসাবে  খুব গর্বিত সিলেন ।এই কারণে পরে যান এবং মারা যান।

পরবর্তী ভীম নিজেই পড়ে যান, তিনি যুধিষ্ঠিরকে ডেকে কারণ জিজ্ঞাসা করেন  ।উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেন যে , তিনি নিজে বেশি  খান  কিন্তু অন্যের ক্ষুধার কথা ভাবেন না ।এভাবে ভীম ও পরে মারা যান

এভাবে  এই ৫ জন  সশরীরে স্বর্গে যেতে পারেন না

দ্রৌপদী এবং পঞ্চপান্ডব কিভাবে মারা গিয়েছিলেন কেবল যুধিষ্ঠির  এবং  কুকুরটি  যাত্রা পথে  শীর্ষে পৌঁছেসিলেন । সেখানে তারা ভগবান ইন্দ্রকে সোনার রথে অপেক্ষা করতে দেখেন। যুধিষ্ঠির ইন্দ্রকে কুকুরটিকেউ  প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, কারণ কুকুরটি তার দীর্ঘ যাত্রার সঙ্গী  ছিলেন। ইন্দ্র তার দাবি অস্বীকার কোরেসিলেন।ইন্দ্র  যুধিষ্ঠারকে কুকুরটিকে রেখে রথে উঠতে বলেন, তবে যুধিষ্ঠ্রী তা প্রত্যাখ্যান করেসিলেন।

ইন্দ্র তাঁর নীতিগত অবস্থান দেখে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়ে বলেছিলেন, “আপনি আবার সততা প্রদর্শন করেছেন এবং স্বর্গে প্রবেশের যোগ্য”তার সাথে যে কুকুরটা ছিলো ওটা ছিলো আসলে ধর্মের দেবতা।ধর্মের দেবতা যুধিষ্ঠির গুণাগুণ ও খু্ব  প্রশংসা করেন।ইন্দ্র যুধিষ্ঠিরকে তার রথের করে সঙ্গে নিয়ে গিলেন।এইভাবে যুধিষ্ঠির তার সততার আর ন্যায়ের মাধ্যমে সশরীরে  স্বর্গে প্রবেশ করেন।

দ্রৌপদী এবং পঞ্চপান্ডব কিভাবে মারা গিয়েছিলেন গল্প যাই হোক না কেন, এটি  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারণা ব্যাখ্যা করে যে যতক্ষণ না আপনি আপনার সমস্ত ক্রোধ, বিদ্বেষ, লোভ ইত্যাদি ত্যাগ না করেন ততক্ষণ আপনি কখনই স্বর্গ অর্জন করতে পারবেন না।

এটি দৈহিক স্বর্গ বা নরকের কথা নয়। এটা মনের অবস্থা। এখানে স্বর্গ শান্তি এবং আনন্দ উপস্থাপন করে এবং নরক দুঃখকে প্রতিনিধিত্ব করে।

সুতরাং আপনি যদি খুশি হতে চান এবং মনের শান্তি অর্জন করতে চান তবে আপনার অন্যের প্রতি সমস্ত ক্রোধ এবং ঘৃণা ত্যাগ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *